কাজী সাঈদ ॥ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ প্রস্তুত বলে জাতির সামনে সম্পূর্ণ অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন। কেননা গণমাধ্যমে প্রতিফলিত চিত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মন্তব্যের সম্পূর্ণ বিপরীত। বাস্তব চিত্র দেখার জন্য ইসি নূরুল হুদাকে আমার বাড়িতে অতিথি হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বাস্তব চিত্র দেখার জন্য ইসি আমার বাড়িতে এক রাত অবস্থান করলে ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ কতটা লেভেল তা বুঝতে পারতেন। ১৭ ডিসেম্বর সোমবার সকালে বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের বিএনপির প্রার্থী বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এম, জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদী উপজেলার শরিকলস্থ তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে ১০ পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে জহির উদ্দিন স্বপন আরও বলেন, গভীর দুঃখের বিষয় হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে আমি রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর থেকে গৌরনদী পৌর মেয়রসহ আমার প্রতিপক্ষ দলের (আওয়ামী লীগের) কতিপয় নেতাকর্মী লাগাতারভাবে প্রকাশ্যে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আমার প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তার সব চক্রান্ত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আমি গত ১২ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে এসে প্রচার কাজ শুরু করেছি।
তিনি বলেন, আমার কর্মসূচিতে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছিল তাদের ওপর সন্ত্রাসীরা নিপীড়ন নির্যাতন চালাচ্ছে। এদের নির্যাতন থেকে নারী ও শিশুও রেহাই পাচ্ছে না। গত ১২ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আমার নির্বাচনী এলাকার ধানের শীষের ২৯ নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। স্বপন বলেন, রাতের আধারে ২৬ নেতাকর্মীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ১০ নেতাকর্মীর দোকানপাট বন্ধ করে এলাকা ত্যাগের হুমকি দেয়া হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি হতে দিচ্ছে না।
লিখিত বক্তব্যে জহির উদ্দিন স্বপন অভিযোগ করেন, আমার কর্মীদের পোস্টার লাগাতে দিচ্ছে না, তাদের মারধর করে পোস্টার ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মাইকিং করতে গেলে কর্মীদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। ধানের শীষের মিছিলে মোটরসাইকেল উঠিয়ে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাধ্য করে আ’লীগে যোগদান ও নৌকার কর্মসূচিতে যোগ দিতে বাধ্য করছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র মাধ্যম পথ। বর্তমান সরকার দেশে ভোটারবিহীন নির্বাচনের সংস্কৃতি চালু করেছে। আমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসি রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারকে অফিশিয়ালি চিঠি দিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আজ অবদি নির্বাচন কমিশনারের আদেশ কার্যকর হয়নি।
জহির উদ্দিন স্বপন নির্বাচন কমিশন ও প্রধান কমিশনারের প্রতি আহ্বান জানান, যতটুটু সময় আছে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্বপালন করুন, ইতিহাসে নাম লেখা থাকবে। অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় এড়াতে পারবেন না। জাতীয় পর্যায়ের ঐক্যজোটের হেভিওয়েট অনেক প্রার্থী ঝুঁকি নিয়ে প্রচারণা চালাতে গিয়ে হামলার স্বীকার হয়েছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বপন বলেন, সংঘাত, সংঘর্ষ এড়াতে আমি কিছুটা সময় ও কৌশল নিয়ে এগোচ্ছি। তাছাড়া বৈরী পরিস্থিতির মোকাবেলায় আমি নেতাকর্মীদের নিয়ে গেরিলা কায়দায় প্রচারণা চালাচ্ছি এবং ১১৭টি ভোটকেন্দ্রে নেতাকর্মীদের নিয়ে ভোটযুদ্ধ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বরিশাল ও গৌরনদীতে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply